ঢাকা: এশিয়া কাপে রান পেলেও স্ট্রাইক রেট নিয়ে সমালোচিত ছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। আর বাবর আজমের সমালোচনা হচ্ছিল ফর্ম ও স্ট্রাইক রেট নিয়ে। কাল রাতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করাচি ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে দুজনে যা ব্যাটিং করলেন,
একেকটি শট ছিল যেন সমালোচকদের মুখে চপেটাঘাত। এই দুজনের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর তাদের সমালোচকদের এক হাত নিলেন চোটের কারণে মাঠের বাইরে থাকা পেসার শাহিন আফ্রিদি। পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটারদের অনেকেই বলছিলেন,
দুজনের একজনকে অন্তত ওপেনিং থেকে সরে যাওয়া উচিত। সাবেক পেসার ও এখনকার নামী কোচ আকিব জাভেদ তো এটাও বলে দেন, বাবরকে আউট না করে ক্রিজে রাখলেই প্রতিপক্ষের লাভ!
বাবরের ফর্মও খুব ভালো যাচ্ছিল না এই সংস্করণে। এশিয়া কাপে ৬ ম্যাচে ব্যর্থতার পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে আউট হন ২৪ বলে ৩১ রান করে। রিজওয়ান রানের ধারায় থাকলেও তার স্ট্রাইক রেট নিয়ে সমালোচনা চলছিল নিত্য।
অবশেষে দুজনের ব্যাট উদ্ভাসিত হলো একসঙ্গে। করাচিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বৃহস্পতিবার ২০০ রানের চ্যালেঞ্জ তাড়ায় পাকিস্তান অবিশ্বাস্যভাবে জিতে যায় একটি উইকেটও না হারিয়ে। রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ে ২০৩ রানের
অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন দুজন। পাকিস্তানের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে একাধিক সেঞ্চুরির কীর্তি গড়ে বাবর খেলেন ৬৬ বলে ১১০ রানের অপরাজিত ইনিংস। ১১ চারের সঙ্গে ছক্কা মারেন ৫টি। রিজওয়ান ৫ চার ও ৪ ছক্কায় অপরাজিত ৮৮ করেন ৫১ বলে। স্ট্রাইক
রেট নিয়ে সমালোচনার জবাবে গত কিছুদিনে নানা কথাই শোনা যায় এই দুজনের কণ্ঠে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে বাবর তো কিছুটা মেজাজও হারিয়ে ফেলেন।
তবে রানে ফেরার পর আর মুখে কিছু বলতে হয়নি তাদের। ব্যাট তো বলে দিয়েছে! “আমার মনে হয়, সময় হয়েছে অধিনায়ক বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানকে সরিয়ে দেওয়ার। এত স্বার্থপর
ক্রিকেটার দুজন! ঠিকভাবে খেললে তো ম্যাচ ১৫ ওভারেই শেষ হয়ে যেত। অথচ দুজন শেষ ওভার পর্যন্ত খেলা টেনে নিয়ে গেছে। এটা নিয়ে আন্দোলন করা উচিত, তাই না?” সমালোচনাকদের খোঁচাটুকু নিয়ে আফ্রিদি
লিখেছেন, “এই পাকিস্তান দলকে নিয়ে আমি দারুণভাবে গর্বিত।”বাবর ও রিজওয়ানের সতীর্থ পেসার হাসান আলি টুইটারেই অল্প কথায় বুঝিয়ে দিয়েছেন দলে এই দুজনের অবস্থান, “পাকিস্তান ক্রিকেটের কিং বাবর আজম ও পাকিস্তানের
সুপারম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ান।” বাবর-রিজওয়ানের সমালোচকদের জন্য জবাব কিছুটা এলো পাকিস্তানের বাইরে থেকেও। ধারাভাষ্যকার ও সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক নাসের হুসেইন মনে করিয়ে
দিলেন এই দুজনের ধারাবাহিকতা। “সত্যিই যদি মনে করে থাকেন, বাবর ও রিজওয়ানই (পাকিস্তান দলের) সমস্যা…তাহলে সত্যি বলতে, আপনি গত দুই বছরে কিছু দেখেননি।”